জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা আন্তর্জাতিক শিশু বিষয়ক তহবিল সংক্ষেপে ইউনিসেফ বিশ্বব্যাপী শিশুদের বিকাশ, উন্নয়ন ও সুরক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করছে। বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকার দারিদ্র্যপীড়িত দেশগুলোতে ইউনিসেফ শিশুদের কল্যাণ ও উন্নয়নে বলিষ্ট অবদান রেখে যাচ্ছে। শিশুর জন্ম, বিকাশ ও উন্নয়নের সাথে নিরাপদ মাতৃত্বের সম্পর্ক থাকায় নারীর উন্নয়নেও কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউনিসেফ বাংলাদেশ শিশু ও নারী উন্নয়নে বাংলাদেশ বেতারের সাথে প্রচারণা ও উদ্বুদ্ধমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আর্থিক সহযোগিতা করে আসছে। বাংলাদেশ বেতারে সামাজিক দায়বদ্ধতার সাথে দেশের উন্নয়নে দক্ষ জনশক্তি তৈরীতে বিভিন্ন ধরণ ও আঙ্গিকে অনুষ্ঠান প্রচার করছে। শ্রোতাদের সাথে সরাসরি তথ্য আদান-প্রদানে সমাজে অন্যসব শ্রেণির শিশু ও নারীদের বিভিন্ন সমস্যা সরাসরি সমাধান দিতে ফোন-ইন অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে। বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে টেলিফোনে তাৎক্ষণিকভাবে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এতে শ্রোতাসাধারণ তাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান পান। আবার জীবন তথ্য বিষয়ক অজানা বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা অর্জনের মাধ্যমে জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পায়। এতে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সঠিক, সহজ ও সুন্দর হয়।
বাংলাদেশ বেতার, রংপুর শ্রোতাকেন্দ্রিক অনুষ্ঠান নির্মাণে সচেষ্ট। শ্রোতারা সমাজে কি ভাবছে এবং সার্বিক অবস্থা কিরূপ বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, শিশু বিবাহ, গর্ভবতী মায়ের চেকআপ বিষয়গুলো ঐ এলাকায় সার্বিক অবস্থা বাণীবদ্ধ করে নিয়ে এসে প্রচার করে। শিশু ও নারী ছাড়া ১৩-১৯ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে ইউনিসেফের সহযোগিতায় কৈশোরের অগ্রদূত বেতার শ্রোতাক্লাব গঠন করার নিমিত্ত রংপুর অঞ্চলে চারটি ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম রংপুর সদরসহ গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানগুলো কিশোর-কিশোরীদের সামাজিক অবস্থান তুলে ধরতে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে অবহিতকরণ কর্মসূচি সফল করা হয়। এই সফল কর্মসূচি তৃণমূল পর্যায়ে ইউনিসেফ বাংলাদেশে এর জাতিগঠন মূলক কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের বার্তা পৌঁছে দেয়। তাছাড়া ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচিতে কিশোর-কিশোরীদের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণ। সৃষ্টিশীল কর্মে তাদের উদ্বুদ্ধকরণে এই কিশোর-কিশোরী শ্রোতাক্লাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এতে সমাজের কিশোর অপরাধ, ইভটিজিং, মাদকাসক্তি ইত্যাদি অপরাধ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ বেতারের জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক অনুষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। বাংলাদেশ বেতার, রংপুরে অনুষ্ঠানটি শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪.৩০মিনিটে “সুখী জীবন” নামে প্রচারিত হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় একটি প্রকল্প হিসাবে জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেল কাজ করছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ‘সুখী জীবন’ অনুষ্ঠানটি এ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। আসর আঙ্গিকে প্রচারিত অনুষ্ঠানটির প্রতিটি চরিত্র শ্রোতাদের কাছে পরিচিত ও জনপ্রিয়। স্বাস্থ্য আপা, জমসের, মর্জিনা, মমতাজ, আরজিনা অনেকেরই পরিচিত ও প্রিয় চরিত্র। আঞ্চলিক ভাষায় পরিচালিত আসরে মজার আলোচনা ছাড়াও অনুষ্ঠানে কথিকা, নাটিকা, সাক্ষাৎকার, প্রামাণ্য অনুষ্ঠান, জনসংখ্যা বিষয়ক দলীয় গান, জারী গান, সরাসরি ফোন-ইন অনুষ্ঠান, কুইজ ও পালাগান নিয়মিত প্রচারিত হয়।
নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানসূচি
প্রচার দিবস : প্রতিদিন (শুক্রবার ছাড়া)
প্রচার সময় : বিকাল ৪.৩০মি. থেকে বিকাল ৫.০০টা পর্যন্ত।
স্থিতি : ৩০ মি.
শনিবার
|
চলন্তিকা: প্রামাণ্য অনুষ্ঠান/ দলীয়গান/ জারী গান
|
রবিবার
|
কথিকা - জনসংখ্যা, স্বাস্থ্যও পুষ্টি বিষয়ক/গান
|
সোমবার
|
স্বাস্থ্য বিষয়ক/গান
|
মঙ্গলবার
|
নাটিকা/গান (২য় ও ৪র্থ মঙ্গলবার কুইজ)
|
বুধবার
|
ফোন-ইন অনুষ্ঠান
|
বৃহস্পতিবার
|
সাক্ষাৎকার ও পালাগান
|
শুক্রবার
|
বিরতি
|